কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত

bdnews24

খালেদা মুক্ত

চোরের মা মুক্তি পেয়েছে। আর কি? বাকী চোরগুলাকেও মুক্ত করা হোক। বর্তমান গণতান্ত্রিক, দুর্নীতিবিরোধী সরকারের কাছে এটাই প্রত্যাশা। বড় চোর অপরাধ করে পার পেয়ে যায়, আর ছোট চোরেরা জেলে আটকা থাকে। এই জন্যই কি আলেকজান্ডার বলেছিলেন:- "সত্যি সেলুকাস, কি বিচিত্র এই দেশ"

ঢাকা, ১১ সেপ্টেম্বর (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)--জামিনে মুক্ত চিকিৎসাধীন ছেলে তারেক রহমানকে দেখতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব চিকিৎসা বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে গেছেন সদ্য কারামুক্ত খালেদা জিয়া। দুপুর দেড়টার দিকে তিনি ডি ব্লকে
প্রবেশ করেন। ডি ব্লকের চারতলার একটি কেবিনে তারেক রহমান রয়েছেন।

এর আগে এক বছর ৭ দিন আটক থাকার পর সংসদ ভবনের বিশেষ কারাগার থেকে জামিনে মুক্তি পান সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। ১১ টা ৩৫ এর দিকে কারাগারের বাইরে আসেন তিনি। মুক্তি পেয়েই প্রয়াত স্বামী জিয়াউর রহমানের মাজার জিয়ারত করেন তিনি। জানাচ্ছেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম এর সুমন মাহমুদ, লিটন হায়দার, প্রদীপ চৌধুরী ও গোলাম মোর্তজা অন্তু। সর্বশেষ খবর জানার জন্য জিপি,একটেল ও বাংলা লিংক থেকে ২৩২৪ এ ফোন করুন।

মুক্তি পেয়েই একটি নিশান প্যাট্রোল জিপে করে জিয়ার
মাজারে যান খালেদা। দুপুর ১২টা ২৮ মিনিটে ফুল দিয়ে মাজারে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন তিনি। এরপর তিনি মাজার জিয়ারত করেন।

এসময় তার সঙ্গে আরো ছিলেন দলের মহাসচিব খন্দকার দেলোয়ার হোসেন , অধ্যাপিকা সারোয়ারি রহমান, এম কে আনোয়ার, নুরুল হুদা, সেলিমা রহমান, ডেপুটি স্পিকার আখতার হামিদ সিদ্দীকী ও রিজভী আহমেদসহ কেন্দ্রীয় নেতা ও সাবেক সাংসদরা। এসময় খালেদা জিয়ার পরনে ছিল সুতার কাজ করা সাদা সুতির শাড়ি ও খয়েরি রংয়ের সানগ্লাস। ১২টা ৪০মিনিটে বড় ছেলে তারেককে দেখতে বঙ্গবন্ধু মেডিক্যালের উদ্দেশে রওয়ানা হন খালেদা।

খালেদা জিয়ার গাড়ি ঘিরে ছিল অসংখ্য উৎফুল্ল নেতাকর্মীর ভিড়। তারা ফুলের পাপড়ি ছিটিয়ে ও স্লোগান দিয়ে নেত্রীকে স্বাগত জানায়।

দুপুর ১২টার দিকে খালেদা জিয়া স্বামীর মাজারে প্রবেশ করেন এবং মাজার জিয়ারত করেন। এর পর তিনি মাজারে ফুল দেন। এসময় বিএনপি মহাসচিব খন্দকার দেলোয়ার হোসেন, বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরী, হান্নান শাহ ও গয়েশ্বর রায়সহ সিনিয়র নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে কারা উপ মহাপরিদর্শক মেজর শামসুল হায়দার ছিদ্দিকী বৃহস্পতিবার সকালে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, " আমি আশা করছি সকাল সাড়ে এগারোটার মধ্যে খালেদা জিয়া মুক্তি পাবেন। জামিন সংক্রান্ত যাবতীয় কাগজপত্র পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা শেষ হয়েছে।"

খালেদা জিয়া তখন বিশেষ কারাগার থেকে বের হয়ে আসার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন বলে জানান কারা উপ মহাপরিদর্শক।

হাইকোর্ট গত মঙ্গলবার নাইকো ও গ্যাটকো
দুর্নীতি মামলায় তিন মাসের জামিন দিলে বিএনপি সভানেত্রীর মুক্তির পথ পরিষ্কার হয়।

এক বছর ৭ দিন কারাবাসের পর খালেদা জিয়া মুক্তি পেলেন।

সকাল সাড়ে ১১ টার দিকে তারেক রহমানের স্ত্রী ডা. জোবায়দা রহমান এবং মেয়ে জাইমা রহমান ফুল নিয়ে বিশেষ কারাগারের ভিতরে প্রবেশ করেন।

জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার
আখতার হামিদ ও কারা মহাপরিদর্শক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জাকির হাসান বেলা ১১টার দিকে বিশেষ কারাগারে যান।

বিশেষ কারাগার ও জিয়ার মাজারের সামনে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের প্রচুর নেতাকর্মী সকাল থেকেই ভিড় জমান। ছাত্রদল ও যুবদলের অনেক সাবেক নেতা মোটর সাইকেল শোভাযাত্রার আয়োজন করেন।

খালেদা জিয়া মুক্তি পেয়ে প্রথমেই জিয়ার মাজারে যাবেন এ খবর পেয়ে বিএনপির হাজার হাজার নেতাকর্মী মাজারে সমবেত হন।
মাজার এলাকায় র‌্যাব ও পুলিশ মোতায়েনসহ ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়।

এদিকে খালেদার আসন্ন মুক্তির খবরে সংসদ ভবনের পেছনের রাস্তায় (লেক সড়ক) বিএনপির নেতাকর্মীরা খণ্ড খণ্ড মিছিল করেন। এসময় রাস্তায় সর্বসাধারণের চলাচল বন্ধ রাখা হয়।

এর আগে বিএনপির দপ্তর সম্পাদক রিজভী আহমেদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, " খালেদা জিয়া মুক্তি পেয়ে প্রথমেই জিয়ার মাজারে যাবেন। এর পর পিজি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বড় ছেলে তারেক রহমানকে দেখতে যাবেন। এছাড়া বিএনপি অফিসেও তার যাওয়ার কথা রয়েছে।"

সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া ও তার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোকে গত বছরের ৩রা সেপ্টেম্বর গ্যাটকো দুর্নীতি মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর খালেদার বিরুদ্ধে আরো তিনটি দুর্নীতি মামলা দায়ের করা হয়। সবগুলো মামলাতেই তিনি পর্যায়ক্রমে জামিন পান।

বুধবার রাতে খালেদার জামিনের কাগজপত্র কারা কর্তৃপক্ষের হাতে পৌঁছায়। সে সময় উপ কারা মহাপরিদর্শক মেজর শামসুল হায়দার ছিদ্দিকী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, বৃহস্পতিবার যে কোনো সময় খালেদা মুক্তি পেতে পারেন।

খালেদার ছোট ছেলে কোকো এবং বড় ছেলে তারেক রহমান আগেই মুক্তি পেয়েছেন। গত ১৭ই জুলাই কোকোকে চিকিৎসার জন্য সাময়িকভাবে এবং ৩রা সেপ্টেম্বর তারেককে জামিনে মুক্তি দেওয়া হয়।

এর আগে কয়েকটি মামলার আসামী আরেক সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকেও চিকিৎসার জন্য সাময়িক মুক্তি দেয় সরকার। গত বছরের ১৬ই জুলাই গ্রেপ্তারের পর এ বছরের ১১ই জুন হাসিনাকে চিকিৎসার জন্য আট সপ্তাহের জন্য মুক্তি দেওয়া হয়। সরকার তার মুক্তির মেয়াদ আগামী ৬ই অক্টোবর পর্যন্ত বাড়িয়েছে। হাসিনা চিকিৎসার জন্য বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে রয়েছেন।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম/এসএম/পিসি/এলএইচ/জিএমএ/এইচবি/এসকে/এফএফ/জিএনএ/১৩৩২ ঘ.

BBC Asia-Pacific

CNN.com - Asia