কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত

bdnews24

চট্টগ্রামে ডিপ্লোমিল্ক ও ইয়াশলী ব্র্যান্ডের গুঁড়ো দুধ বাজেয়াপ্ত

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম

ডিপ্লোমিল্ক ও ইয়াশলী ব্র্যান্ডের গুঁড়ো দুধ বাজারজাত করার কোনো অনুমোদন দেয়নি পণ্যের মান নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা বিএসটিআই। তার পরও এ দুই ব্র্যান্ডের গুঁড়ো দুধ বাজারে বিক্রি হচ্ছে। গতকাল শনিবার বিএসটিআই নগরের বিভিন্ন ওষুধ ও মুদির দোকানে অভিযান চালিয়ে এ দুই ব্র্যান্ডের গুঁড়ো দুধের বেশ কিছু প্যাকেট ও টিনের কৌটা বাজেয়াপ্ত করে।
সানোয়ারা করপোরেশন ডিপ্লোমিল্ক এবং অলওয়ে ট্রেডিং কোম্পানি ইয়াশলী ব্র্যান্ডের গুঁড়ো দুধ বাজারজাত করছে বলে জানা যায়। দুই কোম্পানির বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে বিএসটিআই জানিয়েছে।
এদিকে নারায়ণগঞ্জের কাঁচপুরে নিউজিল্যান্ড ডেইরির ফ্যাক্টরিতে সম্প্রতি তল্লাশি চালিয়েছেন বিএসটিআই ও র‌্যাব-১০-এর সদস্যরা। দীর্ঘ এই অভিযানে তাঁরা নিউজিল্যান্ড ডেইরির আমদানি করা দুধে ভেজাল চীনা দুধের কোনো অস্তিত্ব খুঁজে পাননি। বিএসটিআইয়ের পরীক্ষায় দেখা গেছে, নিউজিল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়া থেকে বাংলাদেশে আমদানি করা রেড কাউ, ডিপ্লোমা, অ্যাঙ্কর, এনলিনসহ সব কটি ব্র্যান্ডের গুঁড়ো দুধ আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন ও সম্পুর্ণ নিরাপদ।
নিউজিল্যান্ডের ফন্টেরা কোম্পানির কাঁচামাল থেকে নিউজিল্যান্ড ডেইরির দুগ্ধজাত পণ্য তৈরি হয়। বিশ্বের মোট চাহিদার ৬৪ শতাংশ গুঁড়ো দুধের জোগানদাতা ফন্টেরা। বাংলাদেশে নিউজিল্যান্ড ডেইরি শুধু অস্ট্রেলিয়া থেকে রেড কাউ ও ডিপ্লোমা এবং নিউজিল্যান্ড থেকে অ্যাঙ্কর, প্রোলিন ও এনলিন আমদানি করে বাজারজাত করে।
গতকাল চট্টগ্রামে বাজেয়াপ্ত করা গুঁড়ো দুধের প্যাকেট ও কৌটায় দেখা গেছে, অনুমোদন না থাকার বিষয়টি ক্রেতারা যাতে বুঝতে না পারে, সে জন্য সুকৌশলে ইয়াশলী ও ডিপ্লোমিল্ক ব্র্যান্ডের গুঁড়ো দুধের প্যাকেট ও কৌটার গায়ে বিএসটিআইয়ের সিলও ছাপিয়ে দেওয়া হয়।
বিএসটিআইয়ের এ অভিযানে সানোয়ারা করপোরেশনের ডিপ্লোমা ব্র্যান্ডের গুঁড়ো দুধও আটক করা হয়। এ ব্র্যান্ডের গুঁড়ো দুধ বাজারজাত করার ব্যাপারে সানোয়ারা করপোরেশনের আইনগত কোনো বৈধতা না থাকায় ডিপ্লোমা ব্র্যান্ডের এসব গুঁড়ো দুধ জব্ধ করা হয় বলে জানা গেছে। আদালতের রায় অনুযায়ী এই ব্র্যান্ড নিউজিলান্ড ডেইরি প্রোডাক্টসের।
অভিযানে নেতৃত্ব দানকারী বিএসটিআই চট্টগ্রাম অঞ্চলের প্রধান ও উপপরিচালক মো. রেজাউল করিম সরকার প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিএসটিআই থেকে অনুমোদন না নিয়ে ইয়াশলী ও ডিপ্লোমিল্ক ব্র্যান্ডের গুঁড়ো দুধ বাজারজাত করা হচ্ছে। এ কারণে এ দুই ব্র্যান্ডের গুঁড়ো দুধের গুণগত মান সম্পর্কে আমরা সন্দিহান।’
রেজাউল করিম আরও বলেন, ইয়াশলী বাজারজাতকারী প্রতিষ্ঠানটি ২০০৭ সালে একটি চালানের ছাড়পত্র নিয়ে বাজারজাত করেছিল। কিন্তু পরে তারা আমদানি করে বাজারজাত করলেও গুঁড়ো দুধের মান পরীক্ষার ছাড়পত্র নেয়নি। এ জন্য তাদের সতর্কও করা হয়।
বিএসটিআইয়ের উপপরিচালক বলেন, ডিপ্লোমিল্ক ব্র্যান্ডের গুঁড়ো দুধ এখনো বিএসটিআইয়ের অনুমোদন পায়নি। অননুমোদিত ব্র্যান্ড হিসেবে ডিপ্লোমিল্ক আটক করা হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে ডিপ্লোমিল্ক বাজারজাতকারী সংস্থা সানোয়ারা করপোরেশনের পরিচালক মো. মুজিবুর রহমান বলেন, ‘তারা নমুনা নিয়ে গেছে, অনুমোদনের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন আছে।’
বিএসটিআইয়ের অনুমোদনের আগে বাজারে ডিপ্লোমিল্ক কেন ছাড়া হলো জানতে চাইলে সানোয়ারা করপোরেশনের এ পরিচালক বলেন, ‘বাজারজাতকরণে তো কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই। আমাদের বাজারজাতকরণে অসুবিধা কোথায়? তাদের জন্য তো আমরা বসে থাকতে পারি না।’
মো. মুজিবুর রহমান বলেন, ‘রেড কাউ ও ডিপ্লোমা ব্র্যান্ডের গুঁড়ো দুধ বাজারজাতকরণে আমাদের ২০১০ সাল পর্যন্ত অনুমোদন আছে। আইনি প্রক্রিয়ার কারণে এখন আমরা এ দুই ধরনের গুঁড়ো দুধ আপাতত বাজারজাত করতে পারছি না। এ জন্য আমরা আমাদের আগের লাইসেন্সের বিপরীতে ডিপ্লোমিল্কের অনুমোদনের বিষয়টিও সংযুক্ত করে দেওয়ার জন্য বিএসটিআইয়ের কাছে আবেদন করেছি।’ তবে এই অনুমোদন পাওয়া যায়নি বলে তিনি স্বীকার করেন।
বিএসটিআই সুত্র জানায়, গতকাল চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের সামনে ওষুধের দোকান, জিইসি মোড় ও কর্ণফুলী কমপ্লেক্সেও ঝটিকা অভিযান চালায় বিএসটিআইয়ের একটি দল। অভিযানে ইয়াশলী ফলোআপ ইনফ্যান্ট ফর্মুলা মিল্ক পাউডারের ৩২টি কৌটা জব্দ করা হয়। প্রতিটি ৪০০ গ্রাম ওজনের এই গুঁড়ো দুধের কৌটার গায়ে লেখা আছে, চীনের গুয়াংডং ইয়াশলী গ্রুপ কোং থেকে আমদানি করে দেশে এই গুঁড়ো দুধ বাজারজাত করছে ঢাকার অলওয়ে ট্রেডিং কোম্পানি। কৌটার গায়ে এই গুঁড়ো দুধের ৩৪টি উপাদানের কথা উল্লেখ আছে। আরও আছে বিডিএস/সিএসি-৭২ নামে বিএসটিআইয়ের সিল।
খবরের সূত্র: প্রথম আলো, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০০৮। লিংক

ব্যবসায়ীরা যে সবাই মানুষ হয় না। এই খবরটি তার একটি প্রমান।

BBC Asia-Pacific

CNN.com - Asia