কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত

bdnews24

বিচার ভিক্ষা চাই না ন্যায়বিচার চাই

অ্যাডভোকেট আনিসুল হক

রায় পক্ষে না গেলেই আদালতকে কটাক্ষ করতে হবে আর পক্ষে গেলে প্রশংসা করা হবে−সেই দর্শন থেকে আমি লিখছি না। আমি যতটুকু জেনেছি, তা থেকেই রায়ের কয়েকটি অসংগতি তুলে ধরতে চাই।
আদালত তাঁর রায়ে একজনের ফাঁসি বহাল রেখেছেন এবং ছয়জনকে খালাস দিয়েছেন। আমার অভিমত, ফাঁসি বহাল রাখার জন্য আদালত অবশ্যই একজন সাক্ষীর ওপর বিশ্বাস রেখেছেন। আমার কথা হলো, একই সাক্ষীর ওপর বিশ্বাস করে একজনকে ফাঁসি দেওয়া হলো, অথচ আরেকজনের বেলায় সেই সাক্ষীকেই অবিশ্বাস করা হলো। এটা রায়ের একটি অসংগতি।
লক্ষ করেছি, বিএনপি সরকার ক্ষমতায় আসার পর বিচারিক আদালত থেকে সব বিএনপি নেতা খালাস পেয়ে গেলেন। এখন হাইকোর্টে আসার পর এ মামলার প্রায় সব আসামি খালাস পেলেন। জনগণ যদি মনে করে দলীয় বিবেচনায় রায় হয়েছে−সেটা কি অন্যায় হবে?
ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের ভেতরে জাতীয় নেতারা যে নিহত হয়েছিলেন, সেটা অস্বীকার করার উপায় নেই। আসামি ও বাদী কোনো পক্ষই এ ব্যাপারে দ্বিমত পোষণ করেনি। আসামি খালাস পাওয়ার পর প্রশ্ন উঠতেই পারে, চার নেতাকে কারা হত্যা করল? আসলে দোষী কারা, সেটা আদালতের বিবেচনায় রাখা দরকার ছিল।
শুনেছি, মামলার ৬৪ নম্বর সাক্ষী ছিলেন তদন্তকারী কর্মকর্তা, রায়ে যাঁর সমালোচনা করা হয়েছে। বলা হয়েছে, মামলা সুষ্ঠুভাবে তদন্ত করা হয়নি। ২১ বছর তদন্ত না হওয়ার জন্য যেসব সরকার রাষ্ট্র পরিচালনায় ছিল, সেসব সরকার দায়ী। ২১ বছরে এ মামলার তদন্ত কেন হলো না, সে ব্যাপার আদালত কোনো বক্তব্য রাখেননি।
২১ বছর মামলা তদন্ত না হওয়ায় অনেক সাক্ষ্য, আলামত নষ্ট হয়ে গেছে, সেটা আদালত দেখেছেন। আমি আশা করেছিলাম, আদালত হয়তো এসব বিবেচনায় আনবেন, এসব আইনের বাইরে নয়। আইনকে সমুন্নত রাখতে এসব বিষয় বিবেচনায় আসতেই পারে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্যি আদালত সেটা করেননি।
আমার বক্তব্য, আমরা বিচার ভিক্ষা চাই না, সুষ্ঠু ও ন্যায়বিচার চাই। এটা পাওয়া আমার অধিকার।
অ্যাডভোকেট আনিসুল হক: রাষ্ট্রপক্ষের প্রধান কৌঁসুলি

প্রথম আলো, ২৯ আগস্ট, ২০০৮

BBC Asia-Pacific

CNN.com - Asia