কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত

bdnews24

চট্টগ্রাম বন্দরে সাড়ে ৩ হাজার টন চালবাহী জাহাজ ডুবি

দৈনিক ইত্তেফাক, ২১ আগস্ট, ২০০৮
। চট্টগ্রাম অফিস ।।

খাদ্য মন্ত্রণালয়ের প্রায় পৌনে ১১ কোটি টাকা মূল্যের ৩ হাজার ৬০০ টন চাল নিয়ে ভারতের কাঁকিনাড়া থেকে চট্টগ্রাম বন্দরে প্রবেশের মুখে অপর একটি জাহাজের সাথে ধাক্কা লেগে ডুবে গেছে শ্রীলংকার পতাকাবাহী জাহাজ ‘বাদুলু ভ্যালী’। গতকাল বুধবার দুপুর দেড়টায় বন্দরের কর্ণফুলী নদীর মোহনা থেকে প্রায় ৩ কিলোমিটার দূরে বঙ্গোপসাগরের বহির্নোঙরে এই দুর্ঘটনা ঘটে। দুর্ঘটনার পর বন্দরের উদ্ধারকারী দল জাহাজে থাকা ১৭ জন নাবিক ও ক্রুর মধ্যে ১৬ জনকে উদ্ধার করে। গতকাল বিকাল ৫টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত নিখোঁজ ছিল জাহাজের চীফ ইঞ্জিনিয়ার। তাৎক্ষণিকভাবে তার নাম ও পরিচয় জানাতে পারেনি সংশিষ্টরা। তবে চীফ ইঞ্জিনিয়ারসহ ৪ জন মিয়ানমারের নাগরিক। আর ১৩ জন শ্রীলংকার নাগরিক বলে জানা গেছে। দুর্ঘটনার প্রকৃত কারণ ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করতে দুই সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। চট্টগ্রাম বন্দরের চেয়ারম্যান কমডোর আর ইউ আহমেদ ইত্তেফাককে বলেন, ‘বহির্নোঙরে এ জাহাজ ডুবে যাওয়ার কারণে চট্টগ্রাম বন্দরের স্বাভাবিক জাহাজ চলাচল কিংবা পণ্য উঠা-নামার ক্ষেত্রে কোন সমস্যা হবে না।’ বন্দরের আরেক জন কর্মকর্তা জানান, বহির্নোঙরে বিশালাকৃতির জাহাজ ডুবির ঘটনা অনেক বছর পরে ঘটলো। জাহাজের বিপুল পরিমাণ চাল খাওয়ার উপযোগী অবস্থায় উদ্ধার করা সম্ভব হবে না। এ চাল ডুবে যাওয়ার কারণে বাংলাদেশের চালের বাজারে কোন প্রভাব পড়বে না বলেও ইত্তেফাককে জানিয়েছেন আমদানিকারকরা। আর এ চালের যাবতীয় ক্ষতি হবে ভারতীয় সরবরাহকারীর। কারণ বন্দরে পৌঁছে বাংলাদেশ সরকারের খাদ্য মন্ত্রণালয়কে চাল বুঝিয়ে দিতে ব্যর্থ হয়েছে তারা। অবশ্য ইন্সুরেন্স কোম্পানী থেকে এসব চালের ক্ষতিপূরণ পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে সরবরাহকারীর।

গতকাল দুপুরে দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে আসা চট্টগ্রাম বন্দরের হারবার মাস্টার নাজমুল আলম ইত্তেফাককে বলেন, ‘বি এ্যাঙ্করেজে অপেক্ষমাণ পানামার পতাকাবাহী জাহাজ হেং ঝুকে ধাক্কা দিতে গিয়ে বাদুলু ভ্যালী ফুটো হয়ে পানি ঢুকে ডুবে যায়। ডুবার পর জাহাজটি উল্টে যায়। নিখোঁজ চীফ ইঞ্জিনিয়ারকে খুঁজে বের করার জন্য নৌবাহিনী, কোস্টগার্ড ও বন্দরের উদ্ধারকারীরা অভিযান চালাচ্ছে।’ তিনি আরো জানান, প্রয়োজনীয় উদ্ধার যন্ত্রপাতি না থাকায় বিশালাকৃতির এ জাহাজ সহসাই উদ্ধার করার সম্ভাবনা নেই। দুর্ঘটনার সময় সাগরে জোয়ার ছিল। বন্দরের পাইলট জাহাজ চালবাহী বিদেশী জাহাজকে জেটিতে নিয়ে আসার জন্য ঘটনাস্থলে পৌঁছার কয়েক মিনিট আগেই এ দুর্ঘটনা ঘটে।

প্রাথমিকভাবে ডুবে যাওয়া চালের মূল্য ১০ কোটি ৮৩ লাখ টাকা বলে জানিয়েছেন খাদ্য অধিদপ্তরের কন্ট্রোলার অব মুভমেন্ট এন্ড স্টোরেজ কর্মকর্তা সালাউদ্দিন আহমেদ। ভারত থেকে আমদানিকৃত এ চাল চট্টগ্রাম বন্দরে বুঝিয়ে দেয়ার দায়িত্ব ভারতের এসকে ট্রেডিং কর্পোরেশন অব ইন্ডিয়ার। জাহাজের শিপিং এজেন্ট ফরচুন শিপিং লাইনের কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাইফুল জানান, প্রায় ৮৮ মিটার লম্বা জাহাজটি চাল নিয়ে দ্রুত গতিতে প্রবেশের মুখে নোঙর করা ভোজ্যতেলবাহী জাহাজ এমটি হেং ঝু’র সাথে ধাক্কা লেগে এ দুর্ঘটনা ঘটে। ৩ দিন আগে ভারতের কাঁকিনাড়া থেকে চাল নিয়ে এটি চট্টগ্রাম বন্দরে প্রবেশ করছিল।

বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব সৈয়দ ফরহাদ উদ্দিন জানান, ঘটনার প্রকৃত কারণ উদঘাটন করতে মার্কেন্টাইল মেরিন ডিপার্টমেন্টের চীফ নটিক্যাল অফিসার ক্যাপ্টেন জসিম উদ্দিন সরকার ও সহকারী হারবার মাস্টার ক্যাপ্টেন রহমত উল্লাহকে প্রধান করে দু’সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে আগামী ৭ দিনের মধ্যে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে।

BBC Asia-Pacific

CNN.com - Asia