কারামুক্ত হয়েই খালেদা জিয়ার মুক্তি চাইলেন মান্নান ভুঁইয়া
বিশেষ প্রতিনিধি
গ্যাটকো দুর্নীতি মামলায় কারামুক্ত হয়েই খালেদা জিয়ার মুক্তি চাইলেন বিএনপির সাবেক মহাসচিব ও সংস্কারপন্থী নেতা আবদুল মান্নান ভুঁইয়া। পাশাপাশি তারেক রহমান, শেখ সেলিম, মোহাম্মদ নাসিম, সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীসহ অসুস্থ কারাবন্দীদের সুচিকিৎসার দাবি জানিয়েছেন তিনি।
এর আগে এ মামলার আসামি জামায়াতে ইসলামীর আমির মতিউর রহমান নিজামী ও বিএনপির নেতা এম কে আনোয়ার জামিনে মুক্তি পান। গত সোমবার সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগ মান্নান ভুঁইয়াকে গ্যাটকো দুর্নীতি মামলায় দুই মাসের জামিন দেন। একই সঙ্গে ওই সময় পর্যন্ত মামলার কার্যক্রম স্থগিত করার নির্দেশ দেন।
দুই মাস ১২ দিন কারাভোগের পর গতকাল বুধবার বিকেল পাঁচটা ৩৫ মিনিটে কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি পান মান্নান ভুঁইয়া। বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) জেড এ খানসহ বিপুলসংখ্যক দলীয় নেতা-কর্মী কারা গেটে তাঁকে স্বাগত জানান।
কারাগার থেকে সরাসরি গুলশানের ন্যাম ফ্ল্যাটের ভাড়া বাড়িতে পৌঁছে সাংবাদিকদের দেওয়া প্রতিক্রিয়ায় মান্নান ভুঁইয়া বলেন, "দলের ঐক্য চাই। আশা করি, ঐক্য হবে।" ভবিষ্যতে নির্বাচনে যদি বিএনপিকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে হয়, তাহলে ঐক্যের বিকল্প নেই বলে মনে করেন তিনি।
গ্যাটকো মামলা সম্পর্কে এক প্রশ্নের উত্তরে বিএনপির সাবেক মহাসচিব বলেন, এটি যদিও আদালতে বিচারাধীন, তবে আইনজীবীরা বলেছেন, এ মামলার কোনো ভিত্তি নেই। এটি দুর্বল মামলা।
মুক্তি পাওয়ায় সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে মান্নান ভুঁইয়া বলেন, ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে সাধারণ কয়েদির জন্য থাকার যে পরিবেশ, তা ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়। তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, যদি মাঝারি আকারের ভুমিকম্পও হয়, তাহলে কেন্দ্রীয় কারাগারের কয়েকটি দালান সম্পুর্ণ ভেঙে পড়তে পারে।
মান্নান ভুঁইয়া বলেন, খুবই ছোটখাটো মামলায় অনেকেই দিনের পর দিন কারাগারে আছেন, যাঁদের জামিন পাওয়া উচিত। তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, যাঁদের পালানোর সম্ভাবনা নেই, তাঁরা কেন জামিন পাবেন না? কারাগারের চিকিৎসাব্যবস্থাও অপ্রতুল বলে জানান তিনি। মান্নান ভুঁইয়া বলেন, যে পরিমাণ রোগী, সে তুলনায় চিকিৎসক কম। এমনকি একটি অ্যাম্বুলেন্স পর্যন্ত নেই। নিজের অভিজ্ঞতা থেকে বলেন, প্রিজন ভ্যানের অবস্থা এতই খারাপ যে না যায় দাঁড়ানো, না যায় বসা। পাশাপাশি কারাগারের কর্মকর্তা-কর্মচারীর সংখ্যাও কম বলে তিনি জানান। এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নিতে সরকারকে আহ্বান জানান বিএনপির সাবেক মহাসচিব।
উল্লেখ্য, ১৮ মে ঢাকার মহানগর জজ আদালতে আত্মসমর্পণ করলে বিচারক আজিজুল হক জামিন নামঞ্জুর করে মান্নান ভুঁইয়াকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। গত বছরের ২ সেপ্টেম্বর খালেদা জিয়া ও তাঁর ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোসহ ১৩ জনকে আসামি করে তেজগাঁও থানায় মামলা করেন দুর্নীতি দমন কমিশনের উপপরিচালক গোলাম শাহরিয়ার চৌধুরী।
প্রথম আলো, ৩১ জুলাই ২০০৮
এই বদমাশীর কারণ কি?