কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত

bdnews24

খুলনায় তিন রাজনৈতিক দলের ঠিকানায় স্কুল, বীমা ও শিপিং কার্যালয়

সামছুজ্জামান শাহীন, খুলনা
নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধনের আবেদনে ন্যাশনাল পিপলস্ পার্টির (এনপিপি) খুলনা জেলা ও মহানগর কমিটির ঠিকানা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে "৭২/১ মিউনিসিপ্যাল ট্যাংক রোড, খুলনা"। কিন্তু ওই ঠিকানায় পাওয়া গেল একটি দ্বিতল বাড়ি। নিচতলায় চলছে "মডার্ন কিন্ডারগার্টেন" নামের একটি বিদ্যালয়। আর ওপরের তলায় বসবাস করছেন বাড়ির মালিক শাজাহান শেখ।
গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে ওই ঠিকানায় খোঁজ নিতে গেলে শাজাহান শেখ সাংবাদিককের সঙ্গে কথা বলতে অনীহা প্রকাশ করেন। তবে তাঁর ছোট ভাই জাহাঙ্গীর জানান, শাজাহানের ভায়রা জাকির হোসেন এনপিপির খুলনা জেলা কমিটির সভাপতি। তিনি ঢাকার ধোলাইখালে স্থায়ীভাবে বসবাস করেন।
মোবাইল ফোনে জানতে চাইলে জাকির হোসেন বলেন, "ভায়রার বাড়ি থেকে দলের কার্যক্রম চালানো হচ্ছিল। তাই সেই ঠিকানা উল্লেখ করা হয়েছে। খুলনা পৌর সুপার মার্কেটে দলের কার্যক্রম চালাতে ভবন ভাড়া নেওয়া হচ্ছে। দু- এক দিনের মধ্যে সেখানে কার্যালয় স্থানান্তর করা হবে। সাইনবোর্ডও বানাতে দেওয়া হয়েছে।"
কল্যাণ পার্টি এবং সামাজিক রাজনৈতিক আন্দোলন নামের দুই দলের থানা ও উপজেলা কার্যালয়ের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি।

খুলনা সদর থানা নির্বাচন কর্মকর্তা মোখলেছুর রহমান বলেন, কল্যাণ পার্টির মহানগর ও জেলা কমিটির কার্যালয়ের ঠিকানায় পাওয়া গেছে জীবন বীমা করপোরেশনের কার্যালয়সহ কয়েকটি শিপিং অফিস। সামাজিক রাজনৈতিক আন্দোলনের খুলনা সদর ও সোনাডাঙ্গা থানার ঠিকানায় কোনো কার্যালয় পাওয়া যায়নি।
জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয় সুত্রে জানা যায়, সামাজিক রাজনৈতিক আন্দোলনের খুলনা মহানগর এবং জেলায় নয়টি কমিটি ও কার্যালয় আছে বলে নিবন্ধনের আবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। এর মধ্যে শুধু মহানগরের বয়রা কলেজ রোডে মহানগর ও জেলা কমিটির কার্যালয়টির অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। ফুলতলা উপজেলা কার্যালয়ের ঠিকানায় পাওয়া গেছে চাল ও তরিতরকারির বাজার। বাকি আটটি কার্যালয়ের অনুসন্ধান চলছে।
প্রথম আলোর অনুসন্ধানে সামাজিক রাজনৈতিক আন্দোলনের আটটি থানা ও উপজেলা কমিটির কার্যালয়ের কোনো অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। দলের সদর ও সোনাডাঙ্গা থানা কমিটির কার্যালয় হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে "৮১ গোবরচাকা, মেইন রোড"। কিন্তু সেখানে কখনো কোনো রাজনৈতিক দলের কার্যালয় ছিল না বলে এলাকাবাসী জানিয়েছে।
দলটির খালিশপুর থানা কমিটির কার্যালয়ের ঠিকানা দেওয়া হয়েছে "মুজগুন্নী মেইন রোড"। ওই রোডের বাসিন্দা ব্যবসায়ী সরদার আজিজুর রহমান ও শেখ মারুফুল হক বলেন, এই সড়কের দুই পাশে আবাসিক এলাকা। এর মধ্যে কোনো রাজনৈতিক দলের কার্যালয় নেই। দৌলতপুর থানা কমিটির ঠিকানায় কার্যালয় দেখানো হয়েছে আড়ংঘাটা ইউনিয়ন। কিন্তু সেখানে গিয়ে পাওয়া যায় একটি ছোট বাজার।
একইভাবে ডুমুরিয়া, রূপসা ও তেরখাদা উপজেলা কমিটির কার্যালয়ের কোনো অস্তিত্বও খুঁজে পাওয়া যায়নি।
সামাজিক রাজনৈতিক দলের জেলা কমিটির সমন্বয়ক কামরুল আলম মিন্টুর নিজস্ব ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের অফিস ভবনের নিচতলায় চালানো হচ্ছে দলের খুলনা মহানগর ও জেলা কমিটির কার্যক্রম।
মিন্টু প্রথম আলোর কাছে দাবি করেন, মহানগর ও জেলা কমিটির বাইরে তাঁদের আটটি থানা ও উপজেলা কমিটির কার্যালয় আছে। কিন্তু সাইনবোর্ড লাগানো হয়নি। তিনি বলেন, থানা ও উপজেলা কমিটির নেতারা জানিয়েছেন, তাঁরা কার্যালয় নিয়েছেন।
সদর ও সোনাডাঙ্গা থানা কমিটির কার্যালয় খুঁজে না পাওয়ার বিষয়ে মিন্টু বলেন, আসলে সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত এস এম এ রবের বড় ছেলে এস এম আরিফুর রহমান মিঠুর অফিস থেকেই ওই দুই কমিটির কর্মকান্ড পরিচালনা করা হয়। কিন্তু গতকাল দুপুরে মিঠু প্রথম আলোকে বলেন, "আমার অফিস থেকে কোনো রাজনৈতিক দলের কর্মকান্ড পরিচালনা করা হয় না।"
একই দলের মহানগর কমিটির সমন্বয়ক শফিউল আলম কিসলু বলেন, নতুন দল তো, তাই সবগুলোর কার্যালয় এখনো নেওয়া হয়নি, চেষ্টা চলছে।
প্রথম আলো, ৩১ অক্টোবর, ২০০৮

BBC Asia-Pacific

CNN.com - Asia