কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত

bdnews24

কোকোর ১১ কোটি ৬৬ লাখ টাকা জব্দ সিঙ্গাপুরে

কোকোর ১১ কোটি ৬৬ লাখ টাকা জব্দ সিঙ্গাপুরে অর্থের উৎস নিয়ে অনুসন্ধানে নেমেছে দুদক

নিজস্ব প্রতিবেদক
সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর ১১ কোটি ৬৬ লাখ টাকা জব্দ করেছে সিঙ্গাপুর সরকার। এই অর্থ সিঙ্গাপুরের ব্যাংকে কোকোর নামে জমা ছিল।
কোকোর এই জব্দ অর্থের বিশদ বিবরণ সিঙ্গাপুর সরকার বাংলাদেশকে জানিয়েছে। এরপরই ওই টাকার উৎসের ব্যাপারে অনুসন্ধান শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন−দুদক। গতকাল বৃহস্পতিবার নিয়মিত সংবাদ ব্রিফিংয়ে দুদকের মহাপরিচালক কর্নেল হানিফ ইকবাল এ তথ্য জানান।
দুদক জানিয়েছে, ২০০৪ সালে সিঙ্গাপুরের এক ব্যক্তির সহযোগিতায় কোকো সে দেশে জেডএএসজেড ট্রেডিং অ্যান্ড কনসালটিং প্রাইভেট লিমিটেড নামের একটি কোম্পানি নিবন্ধন করেন এবং ব্যাংকে হিসাব খোলেন। জেডএএসজেড কোম্পানিটি কোকোর পরিবারের সদস্যদের আদ্যাক্ষর দিয়ে গঠিত। ওই ব্যাংক হিসাবে চায়না হার্বার ইঞ্জিনিয়ারিং নামের একটি প্রতিষ্ঠান ২০০৫ সালের ৬ মে ও ৩১ মে যথাক্রমে নয় লাখ ২০ হাজার ৯৮৬ এবং আট লাখ ৩০ হাজার ৬৫৬ সিঙ্গাপুর ডলার জমা দেয়। চায়না হার্বার ইঞ্জিনিয়ারিং ২০০৫ সালে চট্টগ্রামে কনটেইনার টার্মিনাল নির্মাণের কাজ পায়।
একই বছরের ২৯ জুলাই জেডএএসজেড কোম্পানির ওই হিসাব থেকে কোকোর সই করা চেকের মাধ্যমে আট লাখ ৩০ হাজার ৬৫৬ সিঙ্গাপুর ডলার অন্য একটি হিসাবে স্থানান্তর করা হয়। দ্বিতীয় হিসাবে আবারও চায়না হার্বার ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি থেকে আট লাখ ২৯ হাজার ৭০৬ সিঙ্গাপুর ডলার জমা করা হয়। আরও একটি সুত্র থেকে ওই বছরের ৬ অক্টোবর তিন লাখ তিন হাজার ২৫৪ সিঙ্গাপুর ডলার ওই হিসাবে জমা দেওয়া হয়। সিঙ্গাপুরের অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয় থেকে বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
দুদক আরও জানিয়েছে, গত বছরের ২২ ফেব্রুয়ারি ফরাসি ব্যাংক ক্রেডিট ইন্ডাস্ট্রিয়েল এট কমার্সিয়ালের (সিআইসি) সিঙ্গাপুর শাখায় ২০ লাখ ১৩ হাজার ৪৬৭ সিঙ্গাপুর ডলার স্থানান্তর করা হয়। টাকা স্থানাস্তরে সিঙ্গাপুরের ওই ব্যক্তি ভুমিকা রাখেন।
কর্নেল হানিফ ইকবাল জানান, দুর্নীতিবিরোধী জাতিসংঘ সনদের (ইউএনসিএসি) পরিপ্রেক্ষিতে পারস্পরিক আইনি সহযোগিতার অনুরোধ চাওয়া হলে সিঙ্গাপুরের অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয় এ ব্যাপারে বাংলাদেশকে সহযোগিতা করতে এগিয়ে আসে।
মহাপরিচালক বলেন, অনুসন্ধানে যদি প্রমাণ পাওয়া যায় যে জব্দ করা ওই টাকা অবৈধ উৎস থেকে পাচার করা হয়েছে, তাহলে তা ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নেওয়া হবে।
কোকোর বিরুদ্ধে আগের দুই মামলা: কোকোর বিরুদ্ধে দুদক দুটি দুর্নীতির মামলার অভিযোগপত্র দায়ের করেছে। তবে মামলা দুটির কার্যক্রম হাইকোর্টের আদেশে স্থগিত আছে। এর একটি জ্ঞাতআয়বহির্ভুত সম্পদ অর্জন, অন্যটি গ্যাটকো নামের একটি প্রতিষ্ঠানকে চট্টগ্রাম বন্দর ও ঢাকার কমলাপুর অভ্যন্তরীণ কনটেইনার ডিপোতে কনটেইনার ওঠানো-নামানোর কাজ পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগে। কোকোর বিরুদ্ধে ১১ লাখ ২০ হাজার টাকার তথ্য গোপনসহ দুই কোটি চার লাখ ৬১ হাজার টাকার জ্ঞাতআয়বহির্ভুত সম্পদ অর্জনের প্রমাণ পেয়ে অভিযোগপত্র দাখিল করে দুদক।
গত বছরের ৩ সেপ্টেম্বর গ্যাটকো দুর্নীতির মামলায় কোকোকে গ্রেপ্তার করে নিরাপত্তা বাহিনী। এ বছর ১৭ জুলাই তিনি সরকারের নির্বাহী আদেশে মুক্তি পান। বর্তমানে তিনি থাইল্যান্ডে রয়েছেন।
প্রথম আলো, ১৯ ডিসেম্বর, ২০০৮

BBC Asia-Pacific

CNN.com - Asia