কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত

bdnews24

ক্ষমতায় গেলে সব ‘মূর্তি’ ভেঙে ফেলার ঘোষণা আমিনীর

সমকাল প্রতিবেদক

‘২১ মাসের জরুরি অবস্থার মধ্যে সরকারের দেশ ও ইসলামবিরোধী কিছু পদক্ষেপে মারাত্মক উৎকণ্ঠা সৃষ্টি করেছে’ বলে অভিযোগ করেছেন ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান মুফতি ফজলুল হক আমিনী। তিনি বলেন, ‘আমরা ক্ষমতায় আসলে বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরসহ শেখ হাসিনার সময়কার যত মূর্তি আছে সব ভেঙে ফেলা হবে।’ এক প্রশ্নের জবাবে আমিনী বলেন, ‘আমরা শিখা অনির্বাণসহ সেনাবাহিনীর আগুন পূজারও বিরোধী।’
জিয়া আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সামনে গোলচত্বরে লালন ভাস্কর্য ভাংচুরের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে মুফতি আমিনী এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, জরুরি অবস্থায় রাজনৈতিক দলের মুখ বন্ধ করা যায়, ইসলামের মুখ বন্ধ করা যায় না।
সেনাশাসকরা যদি মনে করেন তারা চিরদিন ক্ষমতায় থাকবেন- তা অসম্ভব। অতীতে আওয়ামী লীগ-বিএনপিও তাই মনে করেছিল। তিনি সরকারের উদ্দেশে বলেন, সময় থাকতে সতর্ক না হলে আফসোস করতে হবে।
আমিনী বলেন, বর্তমান সরকার আবার মুসলমানদের মাতৃভূমিকে ‘পৌত্তলিক দেশ’ বানানোর কাজে হাত দিয়েছে। এক প্রশ্নের জবাবে আমিনী বলেন, খালেদা জিয়ার সময়ে তৈরি মূর্তিও ভাঙতে হবে। ওই সময় কেন শিখা অনির্বাণের বিরোধিতা করেননি জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের কথা তারা শোনেনি।
চারদলীয় ঐক্যজোটের এই শীর্ষ নেতা সাংবাদিকদের বলেন, লুকোচুরির কিছু নেই, সরকার ইসলামবিরোধী কর্মকাণ্ড অবিলম্বে বন্ধ না করলে প্রয়োজনে হরতাল করব, রক্ত দেব, জরুরি অবস্থায় মার্শাল ল’ ভঙ্গ করব। এর আগে লিখিত বক্তব্যে তিনি অঙ্গীকার করেও নারী উন্নয়ন নীতিমালা বাতিল না করা, দৈনিক প্রথম আলো পত্রিকায় হজরত মুহাম্মদের (সাঃ) ব্যঙ্গচিত্র প্রকাশ ও সাপ্তাহিক ২০০০-এ কাবা শরিফ অবমাননার দায়ে মালিকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়া, ব্র্যাকের হাতে প্রাথমিক শিক্ষা তুলে দেওয়া, সারাদেশে মূর্তি স্থাপন, যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তাবিষয়ক কলেজের শিক্ষক ড. তাজ হাশমীকে দিয়ে ইসলামবিরোধী বক্তব্য প্রদানের সমালোচনা করেন।

ড. হাশমী সম্প্রতি সেনাবাহিনীর স্টাফ কলেজে ক্লাস নিতে আমন্ত্রিত হয়ে ঢাকায় আসেন। মুফতি আমিনী বলেন, ১৩ অক্টোবর প্রথম আলোতে ড. হাশমী বাংলাদেশে ইসলামী রাজনীতিকে বেআইনি ঘোষণার সুপারিশ, মাদ্রাসা শিক্ষার বিলুপ্তি, ধর্মাশ্রিত রাজনীতি উন্নতির অন্তরায় ইত্যাদি বক্তব্য দিয়েছেন। এ অবস্থায় কোনো মুসলমানের চুপ করে বসে থাকার সুযোগ নেই। তিনি অবিলম্বে ‘মুরতাদ’কে দেশ থেকে বহিষ্কারের দাবি জানান। এক প্রশ্নের জবাবে আমিনী বলেন, আর্মি স্টাফ কলেজের উচিত ড. হাশমীর ক্লাস না নেওয়া।

ইসলামী আইন বাস্তবায়ন কমিটির ব্যানারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে মাওলানা আবদুল লতিফ নেজামী, মাওলানা শফিক উদ্দিন, মুফতি মোহাম্মদ তৈয়্যব, মাওলানা আবুল কাশেম, মাওলানা আহলুল্লাহ ওয়াছেল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

প্রতিরোধ কমিটির ঘোষণা

এদিকে অপসারিত ভাস্কর্যের জায়গায় হজ মিনার নির্মাণ কাজ শুরু না করা পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবে ‘বিমানবন্দর গোলচত্বর মূর্তি প্রতিরোধ কমিটি’। গতকাল জুমার নামাজ শেষে বিক্ষোভ মিছিল-পূর্ব সমাবেশে এই ঘোষণা দেন মূর্তি প্রতিরোধ কমিটির প্রধান মুফতি নূর হোসাইন নূরানী।

উত্তরা ফায়দাবাদ জামে মসজিদ থেকে মিছিলটি বের হয়ে চুয়ারিরটেক, কোটবাড়ী হয়ে আবদুল্লাহপুরে এসে শেষ হয়। নূরানী কোনো অপপ্রচারে বিভ্রান্ত না হয়ে আগামী ২৪ অক্টোবর বাদ জুমা হজ ক্যাম্পের উত্তর গেটে অনুষ্ঠেয় সমাবেশ সফল করার আহ্বান জানান।
সমকাল, ১৮ অক্টোবর, ২০০৮

BBC Asia-Pacific

CNN.com - Asia