কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত

bdnews24

উগ্রবাদীদের প্রতিবাদে অপসারিত হলো লালনের ভাস্কর্য

সমকাল প্রতিবেদক

উগ্র ধর্মীয় গোষ্ঠীর প্রতিবাদের মুখে অবশেষে অপসারণ করা হলো জিয়া আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সামনের গোল চত্বরে নির্মাণাধীন ‘খাঁচার ভিতর অচিন পাখি’ শীর্ষক লালন শাহর ভাস্কর্যটি। মূলত বাঙালির লোকসংস্কৃতিকে তুলে ধরা হয়েছিল এ স্থাপত্যটিতে। কয়েকদিন ধরে তারা ভাস্কর্যটিকে অপসারণের জন্য আন্দোলন করে আসছিল। আন্দোলন চলছিল খতমে নবুওয়াত আন্দোলনের নেতৃত্বে।

বিমানবন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা খান মোঃ সিরাজুল ইসলাম সমকালকে জানান, ভাস্কর্যটি অপসারণ করা হচ্ছে। বুধবার দুপুর থেকে অপসারণের কাজ শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যে ভাস্কর্য নির্মাণের কাজ প্রায় ৭০ ভাগ সম্পন্ন হয়েছিল।

তবে মৌলবাদীদের দাবির মুখেই তা অপসারণ করা হচ্ছে- এ রকমটি স্বীকার করেননি বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের পরিচালক (অপারেশন অ্যান্ড প্ল্যান) গ্রুপ ক্যাপ্টেন নাইম হাসান। তিনি বলেন, মূলত নকশা পছন্দ না হওয়ায় তা অপসারণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। আরো নকশা পছন্দ করা আছে, প্রয়োজনে সেগুলো ব্যবহার করা হতে পারে।

পুলিশসহ সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, কয়েকদিন ধরে মৌলবাদীরা নির্মাণাধীন ভাস্কর্যটির পেছনে লাগে। আন্দোলনকারী মৌলবাদীরা দলবেঁধে সেখানে হাজির হয়ে শ্রমিকদের কাজও বন্ধ করতে বলে। গতকালও কয়েকজন সেখানে গিয়ে ভাস্কর্যটি টেনে উপড়ে ফেলার চেষ্টা করে। এছাড়া তারা নুর হোসেন নুরানীর নেতৃত্বে মূর্তি প্রতিরোধ নামে একটি কমিটিও গঠন করে। কয়েকদিন আগে ইসলামী ঐক্যজোটসহ বেশ কয়েকটি মৌলবাদী রাজনৈতিক দল এ ব্যাপারে একটি বিবৃতি দেয়।

বিমানবন্দর সড়ক থেকে জিয়া আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্রবেশের মুখে গোল চত্বরে ৪৫ ফুট উঁচু নির্মাণাধীন ভাস্কর্যটির শিল্পী মৃণাল হক। ৩ মাস আগে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের অনুমোদন পাওয়ার পর শিল্পী বাড়িতে বসে কাঠামো তৈরির কাজ শেষ করেন। ঈদের ৪ দিন আগে তা গোল চত্বরে বসানো হয়। এখন এতে ঘষামাজার কাজ চলছিল। লালন ছাড়াও সেখানে একতারা এবং আরো ৪ বাউলশিল্পীর মুখায়ব স্থাপন করা হয়েছিল। ভাস্কর্যটিতে শিল্পী লালন শাহের প্রতিকৃতি ও একতারা ছাড়া লোক সংস্কৃতির বিভিন্ন চিত্র ফুটিয়ে তোলা হয়। কিন্তু মৌলবাদীরা ভাস্কর্যটিকে মূর্তি আখ্যা দিয়ে তা অপসারণের দাবি তোলে। তাদের যুক্তি, হজক্যাম্পের পাশে ওই ধরনের মুখায়বসম্পন্ন ভাস্কর্যের কারণে সেখানে আসা হাজিদের সমস্যায় পড়তে হবে। এখানে মিনার স্থাপন করতে হবে।

সমকাল, ১৬ অক্টোবর, ২০০৮

BBC Asia-Pacific

CNN.com - Asia